Ajker Kolom || আজকের কলম
Help Team HT

ডিপফেক কী? ডিপফেক কাকে বলে | What is Deep Fake?

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সবাই ভাল আছেন! তো প্রতিবারের মতো আজকেও একটি টপিক নিয়ে আলোচনা করবো! আজকের আর্টিকেলের বিষয়বস্তু হচ্ছে,

Deep Fake | গভীর নকল বা গভীর মিথ্যা

আপনার দিনকাল তো ভালোই চলছে। হঠাৎ আপনারই পরিচিত কেউ একজন আপনাকে একটি ভিডিও দেখালো এবং ঐ ভিডিওতে আপনাকে দেখা যাচ্ছে আপত্তিকর অবস্থায় অথবা ঐ ভিডিওতে আপনি কাউকে গালাগালি করছেন। কেমন লাগবে আপনার? ভিডিওটি দেখার পর তো আপনার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার অবস্থা! তবে আপনি নিশ্চিত যে আপনি এসব কর্মকাণ্ড কখনোই করেননি। কিন্তু অনলাইন জগতে ততক্ষণে এটি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। পরিবার বন্ধুজন এবং এলাকায় মুখ দেখানোর মতো পরিস্থিতি আপনার নেই! কেউ বিশ্বাস করছে না আপনাকে। এখন কী করবেন কোনো উপায় ভেবে পাচ্ছেন না। আপনার সাথে যে ঘটনাটি ঘটলো সেটিকে প্রযুক্তির ভাষায় বলে Deep Fake।

“Deep অর্থ গভীর, Fake অর্থ নকল” সুতরাং ডিপফেক মানে হলো গভীর নকল

আপনি ইতিমধ্যে হয়তো দেখেছেন সাধারণত ফটোশপ সফটওয়্যার ব্যবহার করে মাস্কিং, ব্লেন্ডিং করার মাধ্যমে একজনের চেহারা কেটে হুবহু আরেকজনের চেহারা বসিয়ে দেওয়া যায়। এটা হচ্ছে ছবির ক্ষেত্রে। তবে ভিডিওর ক্ষেত্রে আজ থেকে ৬/৭ বছর আগে ব্যাপারটি এতোটা সহজ ছিলো না! কিন্তু বর্তমানের প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়নে যে কোনোকিছুই অসম্ভব না তা আমরা নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছি। মেশিন লার্নিং সম্পর্কে আমরা মোটামুটি সবাই কমবেশি জানি। এই মেশিন লার্নিং টেকনলোজি ব্যবহার করেই মুলতঃ ডিপ ফেক (নকল ভিডিও তৈরি করা হয়। এখন আপনাদের মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগতে পারে যে Deep Fake কিভাবে কাজ করে? তার আগে বলে রাখি যে ডিপ-ফেক বলতে যে শুধু মাত্র নকল অডিও ভিডিওকে বুঝায় তা কিন্তু না। ডিপফেক নামটির মধ্যেই এর আসল অর্থ লুকায়িত আছে। ডিপ মানে হচ্ছে গভীর এবং ফেক মানে নকল। অর্থাৎ ডিপফেক বলতে এমন কিছুকে বুঝানো হচ্ছে যা খুবই গভীর এবং নিখুঁতভাবে নকল করা হয়েছে। যা বর্তমানে চায়না করে থাকে 😜! মজা করলাম 😁।

DeepFake

তো আসল কথায় আসি, মূলত মেশিন লার্নিং হলো ডিপফেক ভিডিও বানানোর মূল হাতিয়ার। কিন্তু এই মেশিন লার্নিংটা কি তাই তো অনেকে জানি না। আপনারা নিশ্চয়ই কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর নাম শুনেছেন! রোবট জাতির ক্রাশ রোবট সোফিয়াকে তো অন্তত সবাই চিনেন। সে সম্পুর্নই একটা যন্ত্র। কিন্তু সে যে মানুষের মতো কথা বলে, কোন প্রশ্নের উত্তরে কেমন মুখের ইমপ্রেশন করতে হবে এসব কিভাবে করে? প্রোগ্রামাররা প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে তার কম্পিউটার সিস্টেমে এমন একটা অ্যালগরিদম করে দিয়েছে যাতে সে নিজেই পরিবেশ এবং অতীতের ঘটনা থেকে শিখতে পারে। এটাই হলো মেশিন লার্নিং! মেশিন লার্নিং এর অপর একটি মেথড এর নাম হলো " জেনারেল অ্যাডভারসেরিয়াল নেটওয়ার্ক"। এর মাধ্যমে প্রথমে একজন ব্যক্তির বিভিন্ন অভিব্যক্তির হাজারখানেক ছবি সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই ছবিগুলো মেশিন লার্নিং এর মাধ্যমে প্রসেসিং করে তার মুখের সব ধরনের সিমুলেশন তৈরি করা হয় এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভিডিও বানানো হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নের ফলে কারো গলার আওয়াজ ও হুবহু নকল করা সম্ভব।

Deep Fake ডিপফেক ভিডিও দেখে বুঝার উপায়ঃ

বর্তমান সময়ে এই সকল ডিপ ফেক ভিডিও শনাক্তকরণ খুবই কঠিন! কেননা আমাদের দৃষ্টির পর্যায়কাল ০.১ সেকেন্ড। অর্থাৎ ১০০ মিলি সেকেন্ডের কম সময়ে ঘটে যাওয়া কোনো দৃশ্য আমাদের চোখে ধরা পড়বে না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করা ভিডিওগুলোতে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটানো যায় এর থেকেও কম সময়ে যাতে করে কোনোভাবেই চোখে না পড়ে যে ভিডিওটা নকল। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো হাই কোয়ালিটির সফটওয়্যার ও তৈরি হয়নি যা এই ধরনের নকল ভিডিও ধরতে পারে। বর্তমানে নগ্ন ভিডিও ভাইরাল হওয়া নিয়ে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি হয় অনলাইনে। কিছু অসৎ লোকজন শত্রুতা করে এসব ভিডিও ছড়িয়ে দেয়। আর ডিটেকশন সফটওয়্যার এর অভাবের কারণে এক কলঙ্কের দাগ নিয়ে সারাজীবন কাটাতে হয়। তাই কোনোকিছু দেখলেই সত্যি মিথ্যা যাচাই না করে কাউকে অপমান করা থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজনের তুলনায় ছবি তুলা থেকে বিরত থাকুন! এবং তা ইন্টারনেটে শেয়ার করার বিষয়ে সতর্ক হন।

এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে লিখেন! অবশ্যই উত্তর দিব!!
আজ এ  পর্যন্তই। আবারো দেখা হবে কোনো এক নতুন পোস্ট নিয়ে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন!
আল্লাহ হাফেজ!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মতামত আমাদের জানান

নবীনতর পূর্বতন